সৌদি আরবে এক ব্যক্তির নিজের শিশু কন্যাকে মারধোর করার ভিডিও মিথ্যে দাবি সহ ভাইরাল হয়েছে
বুম দেখে যে ভিডিওর ওই লোকটি সৌদি আরবে বসবাসকারী এক ফিলিস্তিনী। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর গ্রেপ্তার করা হয় লোকটিকে।
সৌদি আরবে তোলা এক অস্বস্তিকর ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে এক ব্যক্তি এক শিশু কন্যাকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করার সময় তাকে মারছে। ভিডিওটি শেয়ার করা হচ্ছে এই মিথ্যে দাবি করে যে ঘটনাটি ভারতে ঘটেছে।
ভিডিওটির সত্যতা জানতে একজন পাঠক সেটিকে বুমের হোয়াটসঅ্যাপ হেল্পলাইনে (৭৭০০৯০৬১১১) পাঠান।
ভিডিওটির সঙ্গে দেওয়া হিন্দি ক্যাপশনে বলা হয়, “আপনার ফোনের কোনও গ্রুপ বা সদস্য যেন বাদ না পড়ে। এই ভিডিও সকলের কাছে পাঠান। উনি হলেন শকিল আহমেদ আনসারি। ভালসাদে রাজবাগের ডিপিএস স্কুলের শিক্ষক। বেশি বেশি করে শেয়ার করুন যাতে ওই স্কুল ও তার শিক্ষক উভয়কেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। কোনও কিছু ভাইরাল হলে তার প্রভাব পড়ে। উদাসীন ব্যক্তিরা চুপ করে থাকুন।”
হিন্দিতে বলা হয়: आप के whatsapp पे जितने भी नंबर एवं ग्रुप हैं एक भी छूटने नही चाहिए, ये वीडियो सबको भेजिए ये वलसाड के DPS SCHOOL Rajbag का टीचर शकील अहमद अंसारी है इसको इतना शेयर करो की ये टीचर और स्कूल दोनों बंद हो जाए । वीडियो
वायरल होने से काफी फ़र्क पड़ता है ओर कार्यवाही होती है जिसे दया न आये वो अपना मुंह (टाइपिंग) बंद रखे ।)
আরও পড়ুন: কিভাবে গুজরাটে একটি স্কুল ভুয়ো খবরের শিকার হল
অন্য জায়গার শিশু নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে জম্মুর রাজবাগের ডিপিএস স্কুলের নাম জড়িয়ে দেওয়ার নিদর্শন এই প্রথম নয়। বুম আগেও দেখিয়েছে কি ভাবে ভারতের দু’টি স্কুল মিথ্যে খবরের শিকার হয়েছে। স্কুল দু’টি হল গুজরাটের ভালসাদে অবস্থিত আরএম ভিএম স্কুল এবং জম্মুর রাজবাগে অবস্থিত ডিপিএস।
একটি বাচ্চার ওপর নির্যাতনের খুব পুঙ্খনুপুঙ্খ দৃশ্য থাকার কারণে বুম এই প্রতিবেদনের সঙ্গে ভিডিওটি দিচ্ছে না।
টুইটার হ্যান্ডেল ‘পায়েল রহতগি অ্যান্ড টিম’ ভিডিওটি টুইটও করে। ওটি একটি ‘ভেরিফায়েড’ বা পরীক্ষিত টুইটার হ্যান্ডেল। বেশ কয়েকটি অপরীক্ষিত টুইটার হ্যান্ডেলও ভিডিওটি শেয়ার করে। আর্কাইভ সংস্করণগুলি যথাক্রমে এখানে, এখানে আর এখানে দেখা যাবে।
তথ্য যাচাই
ভিডিওটির কয়েকটি প্রধান ফ্রেম নিয়ে বুম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে। দেখা যায়, বেশ কিছু টুইটার হ্যান্ডেল আরবি ভাষায় ভিডিওটি টুইট করে। সেই সঙ্গে বলা হয়, লোকটি সৌদি আরবে বসবাস করে।
এর পর আমরা কয়েকটি প্রধান শব্দ — যেমন, ‘অ্যারাবিক ম্যান বিটিং অ্যান ইনফ্যান্ট’ (আরব ব্যক্তি একটি শিশুকে মারছে)— দিয়ে সার্চ করি। তার ফলে কয়েকটি সংবাদ প্রতিবেদন সামনে আসে। ‘ডেইলি মেল’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়: “ইয়ুসুফ আলকুতাই গালফের দেশে বসবাসকারী এক ফিলিস্তিনী। বাচ্চা মেয়েটিকে দাঁড় করাতে গিয়ে যতবার তার দুর্বল পাগুলি মুড়ে যাচ্ছিল, ততবারই সে বাচ্চাটির মুখে আর পেছনে মারতে থাকে। সেই সময়ই তোলা হয় ছবিটি।”
ভিডিওটি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরই রিয়াধের পুলিশ লোকটিকে গ্রেপ্তার করে। সংবাদ মাধ্যম ‘সৌদি গেজেট’কে সে কথা জানান পুলিশের এক মুখপাত্র। ঘটনাটি সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ঘটেছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
সৌদি আরবে ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসার পর, অনেক টুইটার ব্যবহারকারী লোকটির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ দাবি করে ইউনিসেফকেও ট্যাগ করেন বা জুড়ে দেন তাঁদের পোস্টে। এমনটাই জানায় সংবাদ মাধ্যম ‘গালফ নিউজ’।
সৌদি আরবের শ্রম ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রকের মুখপাত্র (এমএলএসডি) খালেদ আবালখায়েলও ঘটনাটি সম্পর্কে টুইট করেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর মিথ্যে খবরের আঘাত
গুজরাটের ভালসাদে আরএম ভিএম স্কুল এবং জম্মুর রাজবাগে ডিপিএসকে বার বার নিশানা করেছে সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিও। বুম সেই ভিডিওগুলিকে বেশ কিছু দিন ধরে নজরে রেখেছে। এমনকি ভুয়ো খবর কি ভাবে ওই স্কুলগুলিকে আঘাত করেছে, সে সম্পর্কে বুমের পডকাস্টটি (রেডিও খবর বা প্রোগ্রামের মত ইন্টারনেটে দেওয়া প্রোগ্রাম) নীচে শোনা যাবে।